সুনামগঞ্জ , বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
৯ ধরনের মামলার আগে মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক দুই মাসের মধ্যে সব খাস জমির হিসাব নেওয়া হবে : পরিকল্পনা উপদেষ্টা সীমান্তে ১২ লাখ টাকার ভারতীয় গরু জব্দ চার আদিবাসী গ্রামে সুপেয় পানির সংকট সুরমার তীরে ময়লার ভাগাড় টাঙ্গুয়ার ‘দম যায় যায়’ অবস্থা দলগুলোর মতানৈক্য : মাঠে গড়াচ্ছে রাজনীতি পূর্ব ও পশ্চিম নতুনপাড়ার জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবি শিশুশ্রম মুক্ত আদর্শ সুনামগঞ্জ পৌরসভা ঘোষণা বিষয়ে সভা দেখার হাওরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস নয় পথে যেতে যেতে : পথচারী হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় গেলেন নুর ‘ফুল স্পিডে’ চলছে সংসদ নির্বাচনের কেনাকাটা ভূমিকম্পে তেঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের ১০ স্থানে ফাটল সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের কাছে দায়িত্ব হস্থান্তর ফেব্রুয়ারিতে মহোৎসবের নির্বাচন হবে : প্রধান উপদেষ্টা এক ইউপি সদস্য ১৩ প্রকল্পের সভাপতি! জমে উঠেছে দিরাই বাজার মহাজন সমিতির নির্বাচন দুর্ঘটনায় জেলা প্রশাসনের দুই কর্মীর মৃত্যু, চালকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন তারেক রহমান দ্রুত দেশে ফিরবেন : লুৎফুজ্জামান বাবর

দেখার হাওরে নয়, বিশ্ববিদ্যালয় চাই পরিবেশবান্ধব স্থানে

  • আপলোড সময় : ১৮-০৯-২০২৫ ০৯:০১:১০ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৮-০৯-২০২৫ ০৯:০১:১০ পূর্বাহ্ন
দেখার হাওরে নয়, বিশ্ববিদ্যালয় চাই পরিবেশবান্ধব স্থানে
সুনামগঞ্জবাসীর বহু দিনের স্বপ্ন পূরণের পথে এগোচ্ছে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সুবিপ্রবি)। ইতোমধ্যে অস্থায়ী ক্যা¤পাসে পাঠদান শুরু হয়েছে, নতুন প্রজন্ম জ্ঞান অর্জনের নতুন দিগন্তে পা রেখেছে। কিন্তু প্রস্তাবিত স্থায়ী ক্যা¤পাস নির্মাণের জন্য যে জায়গাটি নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটি নিয়ে জোরালো বিতর্ক উঠেছে। সুনামগঞ্জের বৃহত্তম ফসলি হাওর ‘দেখার হাওর’-এর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত জয়কলস মৌজার ১২৫ একর জমিতে স্থায়ী ক্যা¤পাস নির্মাণের পরিকল্পনা স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠনসহ সচেতন নাগরিক সমাজ প্রবলভাবে আলোড়িত করছে। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর যুক্তি উপেক্ষা করার মতো নয়। প্রস্তাবিত স্থানের অধিকাংশই উর্বর বোরো আবাদি জমি, কিছু পতিত জমি ও একটি কবরস্থানও সেখানে রয়েছে। হাওরের ভেতরে এ ধরনের স্থাপনা নির্মাণ শুধু জলপ্রবাহকেই বাধাগ্রস্ত করবে না, বরং কৃষি উৎপাদন, জলজ প্রাণী, জীববৈচিত্র্য এবং স্থানীয় মানুষের জীবিকায় মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। বোরো ধানই হাওরাঞ্চলের মানুষের প্রধান ভরসা। সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে যদি কৃষিজমি ও প্রাকৃতিক স¤পদ ধ্বংস হয়, তবে সেটি হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না- হাওর শুধু কৃষিজমি নয়, এটি একটি জটিল ইকোসিস্টেম। আহসান মারা ও জয়কলস ব্রিজের নিচ দিয়ে প্রবাহিত পানি কালনী নদীতে গিয়ে মেশে। সেখানে অবকাঠামো দাঁড় করানো মানে পুরো জলপ্রবাহকে ঝুঁকির মুখে ফেলা। এর ফলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা কেবল জমি নয়, আশপাশের জনবসতি ও অর্থনীতিকেও বিপর্যস্ত করবে। যে উন্নয়ন প্রকৃতিকে ধ্বংস করে, সেটি কখনো টেকসই হতে পারে না। এ কথা সত্য, সুনামগঞ্জবাসী একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় চায়। শিক্ষার বিস্তার ও আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানের জন্য একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান এই জেলায় অত্যন্ত জরুরি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় চাই- কিন্তু হাওর ভরাট করে নয়। বিকল্প জায়গায় পরিবেশবান্ধব, টেকসই স্থানে বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণই হতে পারে সঠিক পথ। জেলা সদরের আশপাশে অনেক জায়গাই এখনও রয়েছে, যেখানে প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করেই ক্যা¤পাস নির্মাণ সম্ভব। আমরা মনে করি, সরকারি পরিকল্পনা গ্রহণের সময় স্থানীয় মানুষ ও বিশেষজ্ঞদের মতামতকে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া অপরিহার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের সঙ্গে যদি পরিবেশ ধ্বংসের কলঙ্ক জড়িয়ে যায়, তবে এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অনুতাপের কারণ হয়ে থাকবে। অতএব, সরকারের কাছে আমাদের জোর আহ্বান-প্রস্তাবিত জায়গাটি পুনর্বিবেচনা করুন। বিশ্ববিদ্যালয় হোক, তবে তা যেন হয় প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, টেকসই উন্নয়নের প্রতীক। সুনামগঞ্জবাসীর স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়কে যেন না হয় হাওর ধ্বংসের আরেক নাম।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স